অনলাইন ডেস্ক: ডা. সিয়াভাস সোবহানির জন্ম আমেরিকায়, ওয়াশিংটন ডিসিতে। তাঁর বয়স এখন ৬১ বছর। তিনি এদেশে স্কুলে গেছেন, কলেজে গেছেন। ডাক্তার হয়েছেন। জন্মের পর তার পিতামাতা তার বার্থ সার্টিফিকেটও পেয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ডাক্তার হিসাবে প্র্যাকটিসও করছেন।
এ বছর ফেব্রæয়ারি মাসে ডা. সোবহানি নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন পাঠান। এটা কোনো জটিল প্রক্রিয়া নয়। এর আগে তিনি অনেকবার তার পাসপোর্ট নবায়ন করেছেন। কোনো সমস্যা হয়নি। তার পাসপোর্টের মেয়াদ ছিল জুন পর্যন্ত। নতুন পাসপোর্ট না পেয়ে তিনি খোঁজ নিতে গিয়ে দেখলেন তিনি আর নতুন পাসপোর্ট পাবেন না। এমনকি জন্মগতভাবে পাওয়া তার সিটিজেনশিপও নেই।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে পাওয়া একটি চিঠিতে ডা. সোবহানিকে জানানো হয়েছে, জন্মের সময় তার সিটিজেনশিপ দেয়া ভুল ছিল। কারণ তার পিতা ওয়াশিংটনে ইরানি দূতাবাসের একজন কূটনীতিক ছিলেন। বরং ডা. সোবহানিকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে, তিনি যেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইট ভিজিট করে গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করেন।
ডা. সোবহানি বলেন, আমার জন্ম এদেশে, আমি লেখাপড়া করেছি এদেশে। ডাক্তার হয়েছি। প্র্যাকটিস করছি। নিয়মিত ট্যাক্স দিচ্ছি। এবং আমি এই প্রেসিডেন্টকে ভোটও দিয়েছি। ৬১ বছর পর যদি বলা হয়, ওহ, স্যরি, তোমাকে সিটিজেনশিপ দেয়া ভুল হয়েছিল, তুমি আর আমেরিকার সিটিজেন নও, এটা সত্যি সত্যিই খুব শকিং।
ওয়াশিংটন পোস্ট এই খবরটি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করে লিখছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোনো কারণ ছাড়াই তার জন্মগতভাবে পাওয়া সিটিজেনশিপ কেড়ে নিতে পারে না। তার বাবা ইরানি দূতাবাসে কাজ করতেন এটা যদি দোষ হয়ে থাকে, তাহলে তা তার সন্তানের ওপর কেন পড়বে? তাছাড়া তার বাবা ইউএস মিলিটারিতে কাজ করেছেন। তিনি স্বল্পকালের জন্য ইরানি দূতাবাসে কাজ করেছেন। পোস্ট লিখছে, ডা. সোবহানির বার্থ সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্ম ভার্জিনিয়ার ওয়াল্টার রিড আর্মি মেডিকেল সেন্টারে। তিনি ছিলেন ইরানি সরকার ব্যবস্থার একজন সমালোচক। তার ভাই মেরিল্যান্ড স্টেট সিনেটর পদে নির্বাচন করেছিলেন ২০১২ সালে।
ডা. সোবহানি তার সমস্যার কথা জানিয়ে কয়েকজন সিনেটর এবং কংগ্রেস সদস্যর কাছে চিঠি লিখেছেন। কিন্তু কোনো উত্তর পাননি।
যারা মনে করেন, জন্মগতভাবে পাওয়া সিটিজেনদের সিটিজেনশিপ কখনো কেড়ে নেয়া যায় না, তাদের জন্য ডা. সোবহানির ঘটনা একটি দৃষ্টান্ত। অবশ্য এমন দৃষ্টান্ত আরো আছে বলে লিখেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। মূল কথা, ডা. সোবহানির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই আনতে পারেনি স্টেট ডিপার্টমেন্ট, একমাত্র তিনি ‘মুসলমান’- এই ‘অপরাধ’ ছাড়া। যদি তা আদৌ অভিযোগ হয়।
সূত্র-বাঙালী