শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১.৬৪°সে

শবে বরাতে রোজা রাখবেন যেভাবে

শবে বরাতে সারারাত ইবাদত করে পরদিন নফল রোজা রাখেন অনেকে। এই নফল রোজাটি হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত। এ বিষয়ে হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পনেরো শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখ। (ইবনে মাজা, হাদিস, ১৩৮৪)

এই বর্ণনাটির সনদ দুর্বল হলেও হাদিসের প্রথম অংশ—ইবাদতের বিষয়টি অন্যান্য হাদিস দ্বারা সমর্থিত। আর রোজার বিষয়টি শুধু এ বর্ণনায় রয়েছে। তবে কেউ যদি চায় এ মাসের ১৫ তারিখ রোজা রাখতে তাহলে সুযোগ রয়েছে। কেননা ১৫ তারিখ হলো আইয়ামে বিজের অন্তর্ভুক্ত। আইয়ামে বিজ অর্থাৎ প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার বিষয়টিও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তা ছাড়া শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখার কথা সহিহ হাদিসে এসেছে।

হজরত আবু যার রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা বলেন, হে আবু যার! যখন তুমি মাসের মধ্যে তিন দিন রোজা রাখবে; তবে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখবে।’(তিরমিজি, নাসাঈ, মিশকাত)এই রোজা সম্পর্কে আরও বর্ণিত হয়েছে যে, হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুম অমান্য করে বেহেশতের নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করার পর তাদের শরীর থেকে জান্নাতের পোশাক খুলে যায় এবং তাদের শরীরের রং কুৎসিত হয়ে যায়। অতঃপর হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখলে আবার তাদের শরীরের রং পূর্বের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে যায়।শবে বরাতের রোজা প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলি রহ. বলেন, ‘শাবানের ১৫ তারিখ রোজা রাখতে নিষেধ নেই। কেননা ১৫ তারিখ হলো আইয়ামে বিজের অন্তর্ভুক্ত। আর প্রত্যেক মাসের এই তারিখে রোজা রাখা তো মুস্তাহাব। এ ছাড়া রাসুল সা. বিশেষভাবে শাবানের রোজা রাখতে বলেছেন।’ (লাতাইফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা : ১৮৯)

তবে উত্তম হলো ১৫ তারিখের সঙ্গে আগে পরে এক দিন মিলিয়ে নেওয়া, অন্যথায় শুধু এ দিন রোজা রাখার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া মাকরুহ। এমনটাই বলেছেন শায়খ ইবনে তাইমিয়া রহ.।

তাই কেউ যদি আইয়ামে বীজের তিনটি রোজা রাখে তাহলে তা একদিকে অন্যান্য মাসের স্বাভাবিক আমলের অন্তর্ভুক্ত হবে আবার একই সঙ্গে শবে বরাতের রোজা এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। সর্বোপরি রাসূলুল্লাহ সা. রমজান মাসের পর রজব ও শাবান মাসে বেশি নফল ইবাদত তথা নফল নামাজ ও নফল রোজা পালন করতেন; শাবান মাসে কখনো ১০টি নফল রোজা, কখনো ২০টি নফল রোজা, কখনো আরও বেশি রাখতেন। যেহেতু বিভিন্ন সহিহ হাদিসে শাবান মাসের রোজার সাধারণ ফজিলত এবং আইয়ামে বিজের রোজার ফজিলত উল্লেখিত হয়েছে- পাশাপাশি দূর্বল সনদে উপরোক্ত হাদিসটিও বিদ্যমান রয়েছে; তাই কেউ যদি এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে পনেরো শাবানের রোজা রাখেন- তাহলে তিনি সওয়াব পাবেন- ইনশাআল্লাহ।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াতের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত-১৪
রাখাইনে গুরুত্বপূর্ণ সেনা দপ্তর দখল করলো আরাকান আর্মি
আমরা আল্লাহর ওপরে ভরসা করি, হাসিনার ভরসা ভারত: দুলু
১৯ নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
১৯ নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ঢাকায় রাহাত ফতেহ আলী খান, মঞ্চ মাতাবেন রাতে

আরও খবর