1. editorvonj@gmail.com : admin :
  2. nagorikit@gmail.com : administrator :
‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪৩১’ পেলেন- নূরে জান্নাত ও নুসরাত নুসিন - Voice of New Jersey

‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪৩১’ পেলেন- নূরে জান্নাত ও নুসরাত নুসিন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২৭ বার দেখা হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:প্রযুক্তি নির্ভর সাহিত্য থেকে বেড়িয়ে আসতে নতুন প্রজন্মের সাহিত্যিকরা অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিজ্ঞজনেরা। তারা বলেন, ধরনা করা হয় এখন সাহিত্যের সময় না, প্রযুক্তির সময়-কিন্তু প্রযুক্তির এই সময়ে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্তদের সাহিত্য চর্চা দেখে মনে হয় সাহিত্যের সময় শেষ হয়ে যায়নি। নতুন প্রজন্মের নারী সাহিত্যিকরা পরিবর্তিত এই সময়ের সাহিত্যে নিজের দক্ষতা মেধার স্বাক্ষর রেখে সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা চ্যাটজিপিটি যতই শিল্প সাহিত্য ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হোক না কেন, মানুষ সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে যে আবেগ ও অনুভূতির প্রকাশ করে, চ্যাটজিপিটির পক্ষে তা সম্ভব নয়।

আজ শনিবার রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪৩১’ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা। এ বছর কথা সাহিত্যে নূরে জান্নাত ও কবিতায় নুসরাত নুসিন এ সম্মাননা পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। সম্মাননা প্রাপ্তদের সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন কবি ও কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান এবং কথাসাহিত্যিক হামীম কামরুল হক। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তাপস কুমার দত্ত।

অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে নুসরাত নুসিন বলেন, নারীদের কবি হিসেবে সমাজে বেড়ে ওঠা সহজভাবে ঘটে না। নারী সাহিত্যিকদের সমাজে বিকশিত হওয়া একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জের যায়গা থেকে তাদের অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, এই সম্মাননা তাকে বিকশিত ও উৎসাহিত করবে।

যখন পুরস্কার পাই তখন যেমন আনন্দ হচ্ছিল তেমন ভয়ও হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল এই পুরস্কার শেষ পর্যন্ত আমার হবেতো! কারণ অনেক সময় পুরস্কার আমার পাওয়ার কথা থাকলে পরে তা আমি পাই না। আমি যদি যোগ্য হই, তবে কেন শরীরের সিঁড়ি বেয়ে উটতে হবে-অনেক শক্তি আমার পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়ে যায়, নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে এসব কথা বলেন তরুণ সাহিত্যিক নূরে জান্নাত।

গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করে অনেক যুদ্ধ করে করে যখন সাহিত্যে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন নূরে জান্নাত। তখন নারী, রাজনীতি অনেক রকম অপশক্তি বার বার তাকে বৈষম্যের মধ্যে ফেলেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার অর্জন তার কাছে প্রতীয়মান হয় এখনো কোথাও কোথাও মেধা ও যোগ্যতার সম্মান জানানো হয়। এ বছর নবীন অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার যৌথভাবে অর্জন করেন কথা সাহিত্যে নূরে জান্নাত ও কবিতায় নুসরাত নুসিন।

তাসমিমা হোসেন বলেন, নবীন সাহিত্যিকদের সাহিত্য পড়লে বোঝা যায় তারা মানুষ নিয়ে ভাবছে, পরিবেশ নিয়ে ভাবছে। এই সময়ে রাজনীতি, দল, গোষ্ঠী অনেক কারণে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। বৈষম্যের মধ্যে আরও বেশি বৈষম্যের শিকার হয় নারী। নারী সাহিত্যিকরা বৈষম্যের শিকার হয়, তাদের জন্য অনন্যা কাজ করছে। অনন্যা কোনো দলের না কোনো গোষ্ঠীর না, অনন্যা সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করে।

ঝর্না রহমান বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে অনন্যা নারীদের পাশে থেকে কাজ করছে। নবীন নারী সাহিত্যিকদের সম্মাননা প্রদান করে অনন্যা নবীন সাহিত্যিকদের উৎসাহিত করেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির প্রভাব সৃজনশীলতাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, নাকি নতুন সৃজনশীলতা সৃষ্টি হচ্ছে এ নিয়ে আমি শঙ্কিত। অনন্যার মতো এমন ভাবে সৃজনশীলতাকে জিয়িয়ে রাখতে সাহিত্য প্রবাহকে ধরে রাখতে পরলে সাহিত্য প্রবাহ শেষ হবে না।

তিনি আরও বলেন, এই সাহিত্যিকদের শব্দ চয়ন, শব্দ নিয়ে খেলা দেখলে মনে হয় তারা সাহিত্যের গভীরে গিয়ে উপলব্ধি করতে পারে। তিনি সাহিত্য সমৃদ্ধির জন্য তাদের বেশি বেশি পড়ার পরামর্শ দেন। আশাবাদ ব্যক্ত করেন, প্রযুক্তি নির্ভর সাহিত্য থেকে বেড়িয়ে আসতে নতুন প্রজন্মের সাহিত্যিকরা অবদান রাখবে।

কথাসাহিত্যিক হামীম কামরুল হক বলেন, নতুন এই লেখকদের সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে নতুন নারী সাহিত্যিকদের চিন্তা, ভাবনা, ধারনার সাথে যুক্ত হলাম। নারীরা সমাজের যে কোনো স্তর থেকে তার মেধা, চেতনা শক্তি দিয়ে এগিয়ে আসছে। তরুণ সমাজ রাষ্ট্রকে দেখছে তার চোখ দিয়ে। প্রয়োজনে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তার লেখা, তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। নুসরাত নুসিন এবং নূরে জান্নাতের লেখায়, কথায় প্রকাশ পায় গ্রাম লেখার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নয় বরং গ্রামের পরিবেশ লেখার অনুষঙ্গ হয়ে ধরা দেয়। তাদের লেখা বাংলাদেশের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে।

অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট, সম্মাননা চেক (৫০ হাজার টাকা) তুলে দেন পাক্ষিক অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। তাদের ফুলের শুভেচ্ছা ও উত্তরীও প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে তাদের নিয়ে তাপস কুমার দত্ত নির্মিত তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

উল্লেখ্য, বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) থেকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতি বছর সাহিত্যে অসামান্য অবদান রাখার জন্য প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হলেও এবছর দুই নবীন সাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT