রাবি সংবাদদাতা
মধ্যরাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) হলের ছাদে নিয়ে বেধড়ক মারধর ও শিবির অ্যাখ্যা দিয়ে এক সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীকে হত্যা হুমকির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রশাসন ও প্রোক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন, সবুজ বিশ্বাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩১৬ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। তিনি অত্র হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের অনুসারী বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা, আতিকুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৬ মে (বৃহস্পতিবার) মধ্যরাতে (আনুমানিক ২টা) সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি মো. আতিকুর রহমানসহ তার ৮-১০ জন অনুসারী ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে রুম থেকে হলের ছাদে নিয়ে যায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বেধড়ক মারধর করে এবং একপর্যায়ে শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকি প্রদান করেন তাকে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নিজেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী দাবি করলে আরো বেশি মারধর করা হয় তাকে। জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে হল ছাদ ত্যাগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
এছাড়াও অভিযোগ পত্র থেকে আরও জানা যায়, মো. আতিকুর রহমান ও তার অনুসারীরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কক্ষ থেকে পানির ফিল্টার, ক্রিকেট ব্যাট, হেডফোনসহ আরো বেশ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এমতাবস্থায় নিজের নিরাপত্তা শঙ্কায় ও পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে আতঙ্কিত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। প্রতিকার রোধে হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান বলেন, “আমি সবুজ নামের কোনো শিক্ষার্থীকে চিনি না। আমার রুমে কিছুদিন আগে লুটপাট চালায় এই হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের অনুসারীরা। এ বিষয়ে আমি হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে মিথ্যার নাটক সাজিয়েছে তারা। আমি এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিবো এবং প্রয়োজন অনুসারে থানায় মামলা করবো।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, “সোহরাওয়ার্দী হলের যে ঘটনা, সেটি আমি জানার সাথে সাথে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলি। লিখিত অভিযোগ পুরোপুরি সত্যি নয়। সবুজ ওই হলের আবাসিক কোনো শিক্ষার্থী নয়। আবাসিকতা ছাড়া হলে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে নাহ। উক্ত ঘটনা দুই পক্ষের সাথে কথা বলে তা সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “সবুজ নামের ওই শিক্ষার্থী এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী না। এতোদিন সে দলীয় পরিচয়ে এ হলে অবস্থা করছিল। গতকাল তাকে শিবির বলে মারধর করেছে এমন একটি লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করে দেখবো এবং সত্যতা যাচাই করে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।