অনলাইন ডেস্ক:
ভিনদেশি লিলিয়াম ফুল বাগেরহাটে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হওয়ায় বেশ আগ্রহ ফুলপ্রেমিদের। প্রতিদিন ফুলখেত দেখতে আসছেন দূর-দূরান্ত থেকে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। আগামীতে দেশের বিভিন্ন জেলায় লিলিয়াম ফুল চাষে আগ্রহী কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস সংশ্লিষ্টদের।
শীত প্রধান দেশগুলোতে সাদা, হলুদ, কমলা, গোলাপী, লাল ও বেগুনী বর্ণের লিলিয়াম ফুল দেখা যায়। ফুলের বর্ণচ্ছটা অনেকটা চিত্রের মতো। দেখতে কোনো শিল্পী তার তুলি দিয়ে ফুলের গায়ে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছে। এ জাতের ফুলে ছয়টি পাপড়ি থাকে যারা বেশ প্রসারিত হয়।
এবার ১৬ ডিসেম্বর, নববর্ষ ও ২১ ফেব্রুয়ারিতে সুগন্ধি ‘লিলিয়াম’ ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষক।
এ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে মোল্লাহাট উপজেলার গারফা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা ফয়সাল আহম্মেদের জমিতে এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। বিদেশি (নেদারল্যান্ড) জাতের লিলিয়ান ফুলের এ মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে মধুমতি নার্সারির মালিক টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- লাল তীর সিডস লি. পরিচালক তাজওয়ার আউয়াল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিমেষ বালাসহ অনেকে।
সফল উদ্যোক্তা ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাল তীর লিমিটেডের সহযোগিতায় নেদারল্যান্ডের থেকে নিয়ে আসা ২শ কন্দ বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গড়ফা গ্রামের নিজ জমিতে গত ৩০ অক্টোবর পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করি। মাত্র ৩৪ দিনে হারভেস্টে চলে আসে। এতে আমরা খুশি। অল্প সময়ের মধ্যে লাভজনক ফুলের চাষ আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ করা হবে। এটা খুব দামি ফুল। বাজারে চাহিদাও ব্যাপক। এতে আমরা খুব লাভবান হবো মনে করছি। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক আসছেন চাষ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। প্রতিদিন ফুলখেত দেখতে আসছেন দূর-দূরান্ত থেকে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। অনেকে ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন। প্রথমবারের মতো এই ফুল দেখে অনেকে উচ্ছ্বসিত।
লাভনী নামের এক তরুণী বলেন, আমরা ইউটিউবে দেখেছি, আজ নিজের চোখে দেখলাম, ছবি তুললাম। উচ্চমূল্যের ফুল দেখে অনেক ভালো লাগল। আমরা চাই এই ফুলের চাষ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ুক।
লাল তীর সিড লিমিটেডের পরিচালক তাজওয়ার আউয়াল বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বিদেশিদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষকদের সবজিসহ নানা কৃষি পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে নিতে চেষ্টা অব্যাহত আছে। সম্প্রতি লেদারল্যান্ডস থেকে লিলিয়াম ফুলের বাল্ব (কন্দ) এনে চাষিদের দেওয়া হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যে ভালো উৎপাদন হওয়ায় বিদেশি জাতের লিলিয়াম ফুল সম্ভাবনাময় দেখা গেছে। আশাকরি এই ফুলের উৎপাদন বাড়লে আগামীতে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলো রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে। তাই কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর মজুমদার বলেন, লিলিয়াম ফুল বর্ণ-বৈচিত্র্য ও সুগন্ধের কারণে বাংলাদেশেও এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমদানি করা প্রতিটি ফুল আমাদের দেশে দুই থেকে তিনশ টাকায় বিক্রি হয়। বাগেরহাটের মোল্লাহাটে কৃষি উদ্যোক্তা ফয়সাল আহম্মেদ পরীক্ষামূলকভাবে লিলিয়াম ফুল চাষে সফলতা পেয়েছেন। আমরা আশাকরি জেলাব্যাপী লিলিয়াম ফুলের চাষের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে; যাতে কৃষকরা অল্প সময়ের মধ্যে চাষ করে লাভবান হতে পারেন।