ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
এক ধরনের কালো মাটি যা প্রাচীন কোনো জলাশয়, নদীর কিনারায় বা তলদেশে পাওয়া যায়। সাধারণ মাটি থেকে এ মাটি একটু কালো এবং ওজনে হালকা হয়। রোদে শুকিয়ে সে মাটি দিয়ে সারা বছর রান্না বান্নার কাজ করা যায়। স্থানীয়দের নামানুসারে এ কালোমাটির নাম হচ্ছে ‘কসম’।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহের অধীনে নান্দাইলের নরসুন্ধা নদীটির ২৩ কি.মি. খননের কাজ শুরু করেছে। বিশ দিন যাবত ১৩ টি খনন যন্ত্র (ভেকু) উক্ত নদীর খনন কাজ করছে। খনন করতে গিয়ে নদীর কাদামাটির নিচে বা পাশে এক ধরনের হালকা কালো মাটি পাওয়া যাচ্ছে। সে মাটি সংগ্রহের জন্য চলছে নদীর পাড়ের লোকজনের হুড়োহুড়ি। ফলে বিনা পয়সার এ জ্বালানির কদর এখন সবার বাড়িতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজগাতী ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারের নিকট শুভখিলা রেলসেতু ও চংভাদেরা এলাকায় নরসুন্দা নদী খনন যন্ত্রের আশেপাশে দুই পাড়ের বিভিন্ন বয়সের লোক কোদাল, শাবল নিয়ে যে যেভাবে পারছে কসম সংগ্রহ করছে। কেউ বস্তা, বড় গামলা, কেউ খাদি ভরে ভরে মাটি পাড়ে নিয়ে জমা করছে। কেউ কেউ আবার নদীর মাটির নিচে পাওয়া অর্ধপচা গাছের গুড়ি কেটে কেটে লাকড়ি সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক, শামছুল হক ও হাবিবুর জানান, বাপ দাদার কাছে শুনেছেন বড় বড় গাছ পালা নদীর মাটির নিচে চাপা পড়ে এ ধরনের কালো মাটিতে পরিণত হয়েছে। এ মাটি সংগ্রহের পর তা টুকরা টুকরা করে ১৫ থেকে ২০ দিন রোদে শুকাতে হয়। এরপর সারা বছর রান্নার জ্বালানি হিসাবে মজুদ রাখা হয়।
রাজগাতী ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার মমতাজ খোকন জানান, মাটি সংগ্রহে নদীর পাড়ের অসচ্ছল পরিবারগুলোর মধ্যে যে প্রতিযোগিতা তা উৎসবের সৃষ্টি হয়েছে।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার জানান, এ ধরনের মাটি পাওয়া গেলে, সেটি খুব ভালো একটি খবর। আমরা যত বেশি জীবাশ্ব জ্বালানি ব্যবহার করতে পারবো, ততই আমাদের বনাঞ্চল সংরক্ষিত থাকবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান তিনি।