বেল্লাল হোসেন বাবু:
নাটোরে নারী নির্যাতনের মামলায় সাবেক এসপি কারাগারে ; ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকদের উপর হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক : নাটোরে নারী নির্যাতনের মামলায় ময়মনসিংহ রেঞ্জে সংযুক্ত বরখাস্তকৃত সাবেক পুলিশ সুপার এসএম ফজলুল হককে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় সাংবাদিকরা ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে আসামি সাবেক এসপি এস এম ফজলুল হক সাংবাদিকদের উপরে হামলা করেন।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদেশের পর হাজতে না রেখে কোর্ট পুলিশ আসামীকে কোর্ট ইন্সপেক্টর রুমে বসতে দেয়। এরপর দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে কোর্ট ইন্সপেক্টর এর রুম থেকে কারাগারে নেওয়ার জন্য আসামিকে বের করেন। এসময় গনমাধ্যমকর্মীরা আসামির ছবি ও ভিডিও ধারণ করার সময় আসামি তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এসময় এখন টেলিভিশন, সময় টেলিভিশন ও এনটিভির ক্যামেরা পার্সন সহ কয়েকজন ক্যামেরা পার্সন আঘাত প্রাপ্ত হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আসামীকে তাৎক্ষণিক ভাবে আদালতের হাজতে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর নাটোরের কর্তব্যরত সাংবাদিকরা আদালত চত্বরে অবস্থান নেয়। সাংবাদিকরা দাবি করেন— অন্য আসামিদের মত সাবেক এসপি ফজলুল হককে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে কারাগারে নিয়ে যেতে হবে। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে আসামিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এখন টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন জাহিদুল ইসলাম সুমন বলেন, আসামিকে কোর্ট ইন্সপেক্টরের রুম থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা ভিডিও নিচ্ছিলাম। এ সময় আসামি আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে ক্যামেরায় ভাঙ্গার চেষ্টাও করে। ক্যামেরা সেভ করতে গিয়ে আমাদের হাতেও আঘাত লাগে।
যমুনা টেলিভিশনের নাটোর প্রতিনিধি ও নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, একজন আসামীর দ্বারা কোর্ট চত্বরে গণমাধ্যম কর্মীদের হামলার শিকার হওয়া দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত। তিনজন ক্যামেরা পার্সন আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একজন আসামীকে যেভাবে নেওয়া দরকার সেইভাবে যদি সাবেক এসপিকেও হাতকড়া পড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হতো তাহলে আসামি এই হামলা করার সুযোগ পেতেন না।
জানা যায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবর মোছাঃ মেহনাজ আক্তার তার স্বামী পুলিশ সুপার (এসপি) ফজলুল হকের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তার ওপর নির্যাতন, পরোকীয়াসহ নানা অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। এর পরে ফজলুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করে ময়মনসিংহ রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। বাদি পক্ষের আইনজীবী মুশফিক হাসান বলেন, পুলিশ সুপারের নির্যাতনে ২ কন্যা সন্তান নিয়ে মেহনাজ অসহায় জীবন যাপন করছেন। পুলিশ সুপার ফজলুল হক নাটোর শহরের মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা ও তার স্ত্রী মেহনাজ নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার বাসিন্দা। তবে মেহনাজ রাজশাহী তাহার বোনের বাসায় থাকতেন।
Publisher: voiceofnewjersey LLC, USA.
Editor: Masud Alam Chowdhury
© কপিরাইট ২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত