আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভয়েস অব আমেরিকা (VOA)-এর সাংবাদিকরা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এবং ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা ক্যারি লেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় অভিযোগ হিসেবে বলা হয়েছে, হঠাৎ করে নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়ে এই মার্কিন সরকার-সমর্থিত প্রশাসন সংবিধানের প্রথম সংশোধনী (সংবাদপত্রের স্বাধীনতা) এবং কংগ্রেসের কর্তৃত্ব লঙ্ঘন করেছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা মামলায় ৯০০-এর বেশি পূর্ণকালীন কর্মী এবং ৫৫০ জন ঠিকাদারকে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে।
মার্কিন ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (NPR) জানিয়েছে, এসব কর্মী ও ঠিকাদারকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদীদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক হোয়াইট হাউস ব্যুরো প্রধান প্যাটসি উইডাকুসওয়ারা,
প্রেস ফ্রিডম সম্পাদক জেসিকা জেরিয়াট, ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার (USAGM) কর্মকর্তা ক্যাথরিন নিপার প্রমুখ।
ক্যারি লেক, যাকে ট্রাম্প ইউএসএজিএম তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তিনি সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ক্যারি বলেন, ‘এই সংস্থায় (VOA) ব্যাপক অপচয়, প্রতারণা ও দুর্নীতি চলছে। আমেরিকান জনগণের করের টাকা এর পেছনে ব্যয় হওয়া উচিত নয়’।
এদিকে ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধ থাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের ওয়েবসাইট ও স্ট্রিমিং পরিষেবা অচল রয়েছে।
মামলার প্রধান আইনজীবী ডেভিড সাইড মার্কিন প্রসাশনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে ক্যারি লেক ‘ম্যাগা’ (MAGA) কল্পনার জগতে বাস করেন। তার নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবে শত শত সাংবাদিকের জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছে’।
এদিকে প্রেস স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলো এবং বিভিন্ন সাংবাদিক ইউনিয়ন মামলাটিকে সমর্থন করেছে।
শাটডাউনের মারাত্মক প্রভাব
১৯৪০-এর দশক থেকে কংগ্রেসের অর্থায়নে চলা ভয়েস অব আমেরিকা বর্তমানে ১০০টিরও বেশি দেশে ৬৩টি ভাষায় সম্প্রচার কার্যক্রম চালায়। VOA-র পাশাপাশি রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি, রেডিও ফ্রি এশিয়া ও ওপেন টেকনোলজি ফান্ড-এর মতো গণমাধ্যমও USAGM-এর অন্তর্ভুক্ত।
মামলায় বলা হয়েছে, ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছু সাংবাদিক ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। আমেরিকায় অবস্থান করা একজন বিদেশি VOA সাংবাদিকের ভিসার মেয়াদ ৩১ মার্চ শেষ হচ্ছে। যদি তিনি নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হন, তাহলে তার কারাগারে যাওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে। কারণ তার দেশ VOA-কে একটি ‘ক্ষতিকর সংস্থা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
John Doe 4 নামের আরেকজন বিদেশি সাংবাদিক এলজিবিটি-কিউ ব্যক্তি হিসেবে নিজ দেশে নির্যাতনের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
যদিও এ বিষয়ে এখনো ইউএসএজিএম বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান ভিক্টর মোরালেসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সূত্র: আনাদোলু