গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে বসছে কাঁঠালের বিশাল বাজার। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর জৈনাবাজারে এ হাট জমে উঠেছে। স্বাদ, ঘ্রাণ আর আকারে এ জেলার কাঁঠালের খ্যাতি রয়েছে সারা দেশে। এ বাজার থেকেই প্রিয় ফল কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল যাচ্ছে বিদেশেও।
গাজীপুরকে বলা হয় কাঁঠালের রাজধানী। জেলার মধ্যে শ্রীপুরে সবচেয়ে বেশি কাঁঠাল উৎপাদন হয়। অন্য উপজেলার চাইতে শ্রীপুরের মাটি উঁচু ও লাল হওয়ার সুবাদে এখানে ফলন ভালো হয়। এখানে ধানের পর প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম কাঁঠাল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন পাইকাররা এখানে কাঁঠাল কিনতে আসেন।
গাজীপুর সদর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, কালিয়াকৈর, কালীগঞ্জের মাটির গুণে কাঁঠালের ফলন ও স্বাদ বেশি। প্রতিবছর এ অঞ্চলে গড়ে ৮০ হাজার মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়।
বাগান মালিক, পাইকার ও খুচড়া বিক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরে তুলনায় এবার কাঠলের ফলন ভালো হয়েছে। তারা বলেন, কাঁঠালের সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবস্থা না থাকায় বাগান মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সরকার বিদেশে কাঁঠালের বাজার সৃষ্টি করতে না পারায় সম্ভাবনাময় এ খাত থেকে আশানুরূপ ফল আসছে না।
সরেজমিন দেখা গেছে, জৈনাবাজারের পশ্চিম পাশে বিশাল জায়গাজুড়ে কাঁঠালের পাইকারি বাজার বসেছে। বাজারে বড় বড় আড়তদারের কাছ থেকে পাইকারি দরে কাঁঠাল কিনে সেগুলো ট্রাকে তুলছেন ক্রেতারা।
অন্যদিকে সড়কের পাশে শত শত ভ্যানগাড়িতে কাঁঠাল ভর্তি করে বিক্রির অপেক্ষায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন বিক্রেতারা। দেখেশুনে তা কিনছেন ক্রেতারা। একেকটি ভ্যানগাড়িতে মাঝারি আকারের ২০ থেকে ৫০টি কাঁঠাল রয়েছে। বড় পাইকাররা এগুলোর আনুমানিক মূল্য নির্ধারণ করে দর কষাকষি করছেন। এ মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে অন্য বছরের তুলনায় বেশি দামে।
জৈনাবাজারের ব্যবসায়ী আড়ৎদার মাজহার হোসেন বলেন, ১৯৮৫ সাল থেকে এখানে আড়তদারি করি। নোয়াখালী, চিটাগাং, ফেনী, চাঁদপুর, সিলেট, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কাঁঠালের জন্য পাইকাররা আসেন। কম দামে ভালো মানের কাঁঠাল পাওয়া যায় ঐতিহ্যবাহী এ হাটে।
তেলিহাটি গ্রামের আব্দুল কাদির বলেন, গাছের খুব একটা যত্ন করতে হয় না। যত্ন ছাড়াই কাঁঠালের ফলন ভালো হয়। এবার আমার বাগানের ৫০টির মতো গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। এরই মধ্যে আংশিক বিক্রি করেছি।
স্থানীয়রা বলেন, উপজেলায় সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা থাকলে বাগান মালিকরা ন্যায্য দাম পেতেন এবং ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই লাভবান হতেন।
ফেনী থেকে আসা কাঁঠাল ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, জৈনাবাজারের কাঁঠাল খুবই ভালো মানের। অনেক সুস্বাদু, তাই এর চাহিদা অনেক বেশি। এখান থেকে কাঁঠাল নিয়ে আমরা এলাকার বাজারগুলোতে বিক্রি করি।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, এ বছর প্রচুর কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে, বিক্রিও হচ্ছে অনেক। গত বছরের তুলনায় এ বছরের ফলন ভালো হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে গাজীপুরের কাঁঠাল বিদেশেও পাঠানো হচ্ছে।
Publisher: voiceofnewjersey LLC, USA.
Editor: Masud Alam Chowdhury
© কপিরাইট ২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত