পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনায় পদ্মা নদী তীরবর্তী সুজানগর, পাবনা সদর ও ঈশ্বরদী উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিষাক্ত ‘রাসেলস ভাইপার’ সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে।
পদ্মার চরের কলার বাগান, ধানের জমিসহ অন্যান্য ফসলের মাঠ, ঝোপঝাড় এমনকি বসতবাড়িতেও দেখা মিলছে বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত এই সাপ। এ অঞ্চলে রাসেল ভাইপারের কামড়ে গত দুমাসে কমপক্ষে অর্ধশত মানুষ আহত হন। এর মধ্যে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার সরকারি কোনো হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন না পেয়ে আজ (শনিবার) আলম প্রমাণিক (৫০) নামে পদ্মার চরকোমরপুরের এক কৃষক মারা যান।
নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন ও কৃষকরা জানান, ২০১৯ এর শেষের দিকে এ অঞ্চলে প্রথম রাসেলস ভাইপার দেখা যায়। ২০২০ সালের জুন মাসে ঈশ্বরদী উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের মাঝদিয়া বড়পাড়া গ্রামের সেলিনা খাতুন নিজ ঘরেই সাপের কামড়ের শিকার হন। পরিবারের লোকজন সাপটিকে মেরে রোগীর সঙ্গেই নিয়ে আসেন হাসপাতালে। চিকিৎসকরা প্রথমে সাপটিকে চিনতে না পারলেও পরিবেশবিদদের সহায়তায় নিশ্চিত হন সাপটি রাসেলস ভাইপার। এরপর থেকে পদ্মা তীরবর্তী চরে রাসেলস ভাইপারের বিস্তার দেখা যায়।
শনিবার পাবনা সদর উপজেলার ও কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার সীমান্ত এলাকা চরকোমরপুর, চররাধাকান্তপুর, রানীগ্রামসহ বেশ কয়েকটি চরে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে ও কৃষকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে রাসেলস ভাইপারের উপদ্রবের প্রমাণ পাওয়া যায়।
কৃষকরা জানান, চরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ধান, বাদাম ও কলার বাগান রয়েছে। গত এক মাসে এসব ফসলের জমি থেকে তারা অসংখ্য রাসেলস ভাইপার সাপ পিটিয়ে মারেন। এর মধ্যে কয়েকজন সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে চরকোমরপুর গ্রামের কৃষক আলম প্রামাণিক রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা যান।
স্বজনরা জানান, পাবনা কৃষক আলম প্রামাণিক চরের নিজ জমিতে ধান কাটছিলেন। এ সময় তাকে সাপ দংশন করে। স্বজনরা তাকে সরাসরি নিয়ে যান পাবনা জেনারেলে হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে কোনো অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন না পেয়ে বেসরকারিভাবে কেনার জন্য অনেক ক্লিনিকে ও দোকানে যান স্বজনরা। কিন্তু কোথাও ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি। পরে আলমকে নিয়ে যাওয়া হয় ওঝার কাছে।এতে ব্যয় হয় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। এরই মধ্যে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এর আগে সদর উপজেলার চররানীনগর গ্রামের কৃষক সাব্বির (২২) রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা যান।
এদিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার কোনো সরকারি হাসপাতালে সাপের কামড়ের ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল হাসান ভ্যাকসিন না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে জুম মিটিং হয়েছে। খুব শীঘ্রই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।