অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবিকে সমর্থন জানানোর জন্য ‘আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন’ বা এএএফএ-র প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির কংগ্রেস সদস্যরা।
গত ১৫ ডিসেম্বর অ্যাসোসিয়েশনটির সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিফেন লেমার বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন আট কংগ্রেস সদস্য। চিঠিতে তারা পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সরকার ও পোশাক প্রস্তুতকারকদের ওপর চাপ সৃষ্টির কথা বলেন।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ওয়েজ বোর্ড থেকে সর্বশেষ যে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এর ফলে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা গেছে। পুলিশ প্রতিবাদকারী এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে সহিংসতামূলক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত এবং অসংখ্য মানুষ আহত হন। অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, আটক এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের ঘটনাও ঘটেছে।
প্রতিশোধ, সহিংসতা বা ভয়ভীতি ছাড়াই সংঘঠিত ও শান্তিপূর্ণভাবে শ্রমিকদের প্রতিবাদ এবং দর কষাকষির অধিকারকে সম্মান ও রক্ষার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন, যার সঙ্গে আমরা একমত। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি এবং একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ মজুরি নির্ধারণ প্রক্রিয়ার পক্ষে বেশ কয়েকটি মার্কিন ব্র্যান্ডের সমর্থন প্রকাশ দেখে আমরা উৎসাহিত হয়েছি, তবে শুধু আহ্বান জানানোই যথেষ্ট নয়। এমন অবস্থায় আমরা এএএফএ-র প্রতি অনুরোধ জানাই যেন তারা বাংলাদেশে শ্রমিকদের ওপর পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও পোশাক প্রস্তুতকারকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করুন যাতে তারা শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি প্রতিমাসে ২০৮ ডলার বাস্তবায়ন করে।
সংগঠনের স্বাধীনতার অধিকারসহ শ্রম ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য সদস্য কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যকলাপ এবং সাপ্লাই চেইনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করুন।
চিঠিতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের ওপর দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিতে এএএফএর প্রতি আহ্বান জানান কংগ্রেস সদস্যরা। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের বন্ধ করতে তাদের সতর্ক করতে বলা হয় চিঠিতে। শ্রমিকদের বরখাস্ত, কালো তালিকাভুক্ত করা কিংবা শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের হয়রানি অগ্রহণযোগ্য। এর কারণে এএএফএর সোর্সিং সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে তা জানিয়ে দিতে বলেছেন কংগ্রেস সদস্যরা। একই সঙ্গে তারা মজুরিসংক্রান্ত বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের গ্রেপ্তার বন্ধ করতে এবং অবিলম্বে নির্দোষ আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানোর কথা বলেছেন।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী কংগ্রেস সদস্যরা হচ্ছেন ইলহান আব্দুল্লাহি ওমর, জেমস পি ম্যাকগোভার্ন, জান শাকোস্কি, রাউল গ্রিজালভা, বারবারা লি, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, ডেভিড ট্রোন এবং সুসান ওয়াইল্ড।