অনলাইন ডেস্ক:
আগামী নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে অযোগ্য ঘোষণায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে কংগ্রেসকেই। এমন অভিমত দিয়েছেন মিনেসোটা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নাতালি হাডসন।
ট্রাম্পকে অযোগ্য ঘোষণার মামলার শুনানিতে তিনি বলেন, যদি মেনেও নেয়া হয় সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী তৃতীয় অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাবেক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা হারিয়েছেন।
মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ মার্চ মিনেসোটায় প্রাইমারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রাইমারি নির্বাচনসহ ২০২৪ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনেও যাতে ব্যালট পেপারে ট্রাম্পের নাম মুদ্রণ করা না হয়, সেজন্য নিবেদন করা হয়েছে আর্জিতে। ১৯৬৮ সালের ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর তৃতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো আমেরিকান কর্মকর্তা, যিনি সংবিধান অনুযায়ী শপথ গ্রহণ করেছেন তিনি যদি বিদ্রোহ বা বিদ্রোহে লিপ্ত হন বা বিদ্রোহকারীদের সাহায্য কা সান্তনা দিয়ে থাকেন, তাহলে ভবিষ্যতে তিনি কোনো পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। গত সপ্তাহে স্টেট অফ কলোরাডোতে ঠিক একই ধরনের একটি মামলা দায়ের করা পর গত মঙ্গলবার মিনেসোটায় এই মামলা দায়ের করা হয়।
মামলাটি আটজন ভোটারের পক্ষে দায়ের করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন রিপাবলিকান পার্টি কর্তৃক নির্বাচিত স্টেট সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তণ বিচারক, স্টেটের একজন ডেমোক্রেট দলীয় স্টেট সেক্রেটারি অফ স্টেট এবং একজন রিপাবলিকান সমর্থক ইরাক যুদ্ধের ভেটারেন।
মামলা প্রসঙ্গে গত সপ্তাহে মিনেসোটার ডেমোক্রেট দলীয় সেক্রেটারি অফ স্টেট স্টিভ সাইমন বলেছেন, মিনেসোটাবাসী স্টেটের আইন অনুযায়ী যেকোনো আইনগত ইস্যু নিয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারে, বিশেষ করে যদি তারা মনে করেন যে সংবিধান লংঘন করে কোনোকিছু করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থীর একটি তালিকা স্টেটকে সরবরাহ করে থাকে, যে তালিকায় প্রার্থীদের নামোল্লেখ থাকে সেই নামগুলোই ব্যালট পেপারে পদপ্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু স্টিভ সাইমনের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আমরা আশা করি মিনেসোটার ভোটারদের সাথে ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে আদালত বিষয়টির একটি সুরাহা করবে।
মিনেসোটার উদারপন্থী গ্রুটির মামলার আর্জিতে আরো বলা হয় যে, ২০২০ সালের নির্বাচনী ফলাফল মেনে না নিয়ে ট্রাম্প তার সমর্থকদের ক্যাপিটল হিলে জড়ো করেন এবং তাদেরকে উস্কানি দিয়ে ক্যাপিটল হিলে কংগ্রেসের অধিবেশন কক্ষে হামলা চালান ও ভাংচুর করেন। মামলার বাদীপক্ষ মনে করেন যে ট্রাম্প এখানে সুস্পষ্টভাবে সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী লংঘন করেছেন। গত বছর কংগ্রেসের একটি বাইপার্টিসান গ্রুপ সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর আলোকে ট্রাম্পকে ভবিষ্যতে সরকারের যেকোনো পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত প্রকাশ করা হবে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেছেন যে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত প্রতিটি ইস্যু আদালতে চ্যালেঞ্জ করবেন। কিছু সংবিধান বিশেষজ্ঞ চতুর্দশ সংশোধনীর চ্যালেঞ্জের কার্যকারিতা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ক্রমবর্ধমান পাইপার্টিসান সংবিধান বিশেষজ্ঞ এই তত্ত্বের পেছনে তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে যে এই মামলাগুলো আদালতে পর্বত সমান বাধারসম্মুখীণ হবে। স্টেট আদালতগুলোতে যদি ট্রাম্প হেরে যান, তাহলে তিনি প্রথমে একটি সার্কিট কোর্টে আপিল করতে পারবেন।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুরো ব্যাপারটিকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করবেন। কারণ সুপ্রিম কোর্টে একাধিক নমিনীসহ রক্ষণশীল রিপাবলিকাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক বিচারক রয়েছেন।