অনলাইন ডেস্ক:পাঁচ আরোহী নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া ডুবোযান টাইটানে শক্তিশালী বিস্ফোরণে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে বলে ধারণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার এডমিরাল জন মাগার বলেন, ধ্বংসস্তূপের যে চিত্র পাওয়া গেছে তা বিপর্যকর বিস্ফোরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আটলান্টিকের পানিতে ডুব দেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় টাইটানের সঙ্গে পানির ওপরে থাকা সেটির নিয়ন্ত্রক জাহাজ পোলার প্রিন্সের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে চলছিল টাইটানের উদ্ধার অভিযান।
উদ্ধারকারীদের আশা ছিল হয়তো কোনো কারণে টাইটান পানির নিচে তলিয়ে গেছে, ভেসে উঠতে পারছেন না। যে কারণে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্ধারকর্মীরা টাইটানের অবস্থান সনাক্ত করে সেটিকে তুলে আনতে চাইছিল। তাদের ভয় ছিল, ডুবোযানে সংরক্ষিত অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে আরোহীরা দম বন্ধ হয়ে মারা পড়তে পারেন।
বৃহস্পতিবার সকালে টাইটানের খোঁজে একটি রিমোটলি অপারেটেড ভেহিক্যাল বা আরওভি আটলান্টিকের তলদেশে পৌঁছায়।
পানির তলদেশে চলাচলে সক্ষম ওই রোবটযানটি কানাডার জাহাজ হরিজন আর্কটিক থেকে পরিচালনা করা হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে খবর আসে আটলান্টিকের তলদেশে পাঠানো রোবটযানটি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে কিছু ধ্বংসস্তূপ খুঁজে পেয়েছে।
শক্তিশালী বিস্ফোরণে টুকরো টুকরো হয়ে যায় টাইটান। পরে রোবটযানের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে সংবাদ সম্মেলন ডাকে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড। সেই সংবাদ সম্মেলনে রোবটযানের খুঁজে পাওয়া ধ্বংসস্তূপ ডুবোযান টাইটানের বলে নিশ্চিত করা হয়।
বলা হয়, যে এলাকায় ধ্বংসস্তূপ খুঁজে পাওয়া গেছে সেটি টাইটানিকের ধ্বাংসাবশেষ থেকে প্রায় ১৬০০ ফুট দূরে এবং সেখানে টাইটানিকের কোনো ধ্বংসাবশেষ পড়ে নেই।
পাঁচ আরোহীর মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া নিয়েও কোনো আশা দেখাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। বরং রিয়ার এডমিরাল জন মাগার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ওই পাঁচজনের লাশ হয়ত কখনও মিলবে না। সেখানে পরিবেশ অবিশ্বাস্যরকম নির্মম।
টাইটানের ক্যাপসুলে থাকা পাঁচ আরোহীর মধ্যে ওশানগেইটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশও (৬১) ছিলেন।
এছাড়া ছিলেন- ব্রিটিশ ধনকুবের, বিমান সংস্থা অ্যাকশন এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হামিশ হার্ডিং (৫৮), পাকিস্তানের এংরো করপোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ফরাসি পর্যটক পল অঁরি নারজিলে (৭৭)।
১৯১২ সালে ইংল্যান্ডের নিউ সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে প্রথম যাত্রায় বিশাল আইসবার্গের ধাক্কায় ডুবে গিয়েছিল তখনকার সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক, প্রাণ গিয়েছিল দেড় হাজার মানুষের।