আনোয়ার হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধায় মসজিদের কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে শাহিদুল প্রধান (৪৫) নামে ১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭ জন। আহতদের মধ্যে ৪ জনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুম্মার নামাজের পর জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মালাধর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।নিহত শাহিদুল প্রধান (৪৫) ওই গ্রামের হাসিম প্রধানের ছেলে। অভিযুক্ত মজিদুল ইসলাম (৫০) একই গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, আব্দুর গফুর (৩৮), শাকিল আহমেদ (২৭) ও শাফিউল সোহাগ (৩০)। তাদের সবার বাড়ি মালাধর গ্রামে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, সাতগ্রাম নিয়ে মালাধর জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। সম্প্রতি মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার মুসল্লিদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে শুক্রবার নামাজ পর কমিটি গঠন নিয়ে দু’পক্ষের মুসল্লিরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে মজিদুল ইসলামসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজন নিয়ে শাহিদুল প্রধানের ওপর হামলা করে। হামলায় শাহিদুল প্রধান মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুত্বর আহত হন। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত: ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ৭ জন। আহতদের মধ্যে ৪ জনকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় মুসল্লি, সিরাজুল ইসলাম জানান, মসজিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গঠন নিয়ে নামাজের পর স্থানীয় মুসল্লিদের বসার কথা। এ নিয়ে মজিদুল ইসলামের সঙ্গে শাহিদুল প্রধানের তর্ক হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধলে মজিদুলসহ তার লোকজনের হামলায় শাহিদুল মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুত্বর আহত হন।
মুসল্লিদের অভিযোগ, এর আগে মজিদুল ইসলাম মসজিদের সভাপতি ছিলেন। তিনি আবারও গোপনে তার পছন্দের লোক দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির জেরে পরিকল্পিতভাবে মজিদুল তার লোকজন নিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটায়।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, শাহিদুল প্রধান একজন দিনমজুর। সাধারণ মুসল্লির মতো মসজিদে নামাজ আদায় করেন তিনি। কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব কিংবা কোনো পক্ষেই তিনি ছিলেন না। কিন্তু তার ওপরে হামলা করে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হলো। তারা এ হত্যাকাণ্ডে মজিদুলসহ তার সঙ্গে থাকা জড়িতদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।