চাইথোয়াইমং মারমা স্টাফ রিপোর্টার রাঙ্গামাটি :
রাঙামাটির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দেওয়ানী বিরোধ জোরপূর্বক মীমাংসার অভিযোগে ঘটনার তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) লিখিতভাবে চিঠি দিয়েছেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার। চিঠির একটি কপি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, জেলা শহরের তবলছড়ি এলাকার বাসিন্দা নিপু মায়া ছেত্রী গত ৩ জুন সম্পত্তির সীমানা বিরোধ সংক্রান্ত একটি এডিআর দায়ের করেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে। এ ঘটনার পর লিগ্যাল এইড অফিস বাদী নিপু মায়া ছেত্রী ও বিবাদীপক্ষ রিতা চাকমাকে আগামী ৩০ জুন উভয়পক্ষকে আপসে বিরোধ মীমাংসার জন্য শুনানির দিন ধার্য্য করেন। লিগ্যাল এইড অফিসে অভিযোগের শুনানি কার্যক্রম চলমান থাকার মধ্যেই ১১ জুন কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলী ৪/৫ জন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বিরোধপূর্ণ জায়গায় এসে থানার মাধ্যমে আপসের প্রস্তাব দেন। থানায় চা খাওয়ার দাওয়াত দেওয়ার পাশাপাশি ওসি বলেন, জেলা লিগ্যাল এইড অফিস কিছুই করতে পারবে না, থানার মাধ্যমেই আপস করতে হবে। থানায় বসিয়ে নালিশী সভার আয়োজন করা পুলিশের এখতিয়ার বহির্ভূত এবং বিরোধীয় বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে লিগ্যাল এইড অফিসে একটি আপস মীমাংসা প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আদেশে লিগ্যাল এইড অফিসার উল্লেখ করে, ৩ জুন বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ৪ জুন বিকালে স্থানীয় কাউন্সিলর পুলক দে’র উপস্থিতিতে সরেজমিন পরিদর্শকপূর্বক মীমাংসা সভা করা হয়। বিষয়টি আপস-মীমাংসার স্বার্থে প্রার্থীক পক্ষ কর্তৃক প্রতিপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে মীমাংসার প্রস্তাব করলে প্রার্থীকপক্ষ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত মতামত জানানোর সময় নেন। উভয়পক্ষের বক্তব্যে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ওসি কোতোয়ালি লিগ্যাল এইডের অফিসের দেওয়ানী প্রি-কেইস এডিআর বে-আইনিভাবে আপসের চেষ্টা করেছেন। এমতাবস্থায় কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলী কর্তৃক চলমান দেওয়ানী বিরোধ জোরপূর্বক মীমাংস চেষ্টার বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
রাঙামাটি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. জুনাইদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি’র বিরুদ্ধে থানার অভিযোগ করে রিতা চাকমা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে লিগ্যাল এইড অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পর আমরা লিগ্যাল এইড অফিসের মধ্যস্থতায় আপসে মীমাংসার দিকে যাচ্ছি। সেখানে থানার ওসি একটি পক্ষ নিয়ে আমাদের থানায় ডেকে নালিশের প্রস্তাব দেন। উনি তো একটা পক্ষের হয়ে এমনটা করতে পারেন না।’
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলী বলেন, ‘তাদের মামলাটি এডিএম কোর্টে ছিল, পরে লিগ্যাল এইড অফিসেও গিয়েছে। জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় বসে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। দু’পক্ষ চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে সমাধান করতে পারেন। আমাদের ঘটনাস্থলে যাওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়। তবে জায়গা সংক্রান্ত ঘটনা হলেও যদি আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয় সেখানে আমাদের তো দেখতে হয়।’