অনলাইন ডেস্ক :
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর টাভার অঞ্চলে একটি প্রাইভেট বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে থাকা ১০ জনের সবাই নিহত হয়েছেন।
বিমানযাত্রীর তালিকায় ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নাম ছিল। বুধবার মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। খবর রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাসের।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরআইএ নভোস্তির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিগোজিনসহ ওই বিমানে ১০ আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ক্রু। দুর্ঘটনায় সবাই নিহত হয়েছেন।
রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ (রোসাভিয়াতসিয়া) বলেছে, দুর্ঘটনার শিকার বিমানের যাত্রীদের তালিকায় প্রিগোজিনের নাম রয়েছে।
নিহত আরোহীদের একজনের নাম প্রিগোজিন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও। তবে দুর্ঘটনার বিষয়ে আর কোনো তথ্য জানায়নি তারা।
রুশ সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, ১০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে উদ্ধার অভিযান শেষ করেছে রাশিয়ার জরুরি সেবা বিভাগ। তবে লাশগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি।
এর আগে ওয়াগনার গ্রুপ–সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন খবরে জানা যায়, মস্কোর উত্তরের একটি এলাকায় আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার গোলাবর্ষণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।
প্রিগোজিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিল। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের আগ পর্যন্ত আড়ালে থেকে বাহিনী পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধে তিনি ও তার বাহিনী প্রকাশ্যে আলোচনায় আসেন।
প্রিগোজিনের যোদ্ধারা রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে জুন মাসের শেষের দিকে ওয়াগনার বাহিনী সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহের অবসান হয়। সমঝোতা অনুসারে তার বেলারুশে নির্বাসনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কোথায় অবস্থান করছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।
এ সপ্তাহের শুরুতে প্রিগোজিন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন তাতে তিনি আফ্রিকায় থাকার দাবি করেছেন।
প্রিগোজিন সেন্ট পিটার্সবার্গে বড় হন। ৮০’র দশকে চুরি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর ৯ বছর কারাগারে ছিলেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ৯০’র দশকে তার পরিচয়। ক্রেমলিনের বিভিন্ন খাবারের চুক্তি পাওয়ার মাধ্যমে বিত্তশালী হয়ে ওঠেন তিনি। একসময় তিনি ‘পুতিনের শেফ’ হিসেবে পরিচিত পান।